ব্রেইন হ্যাকিং, এই কথাটি শুনেই অনেকে চমকে উঠতে পারেন। তবে অবাক করার মতই আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, এই কাজটি অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। তবে এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কিভাবে মানুষের মস্তিষ্ক কে আরও কর্মক্ষম করে তোলা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়টি নিয়ে নানামুখী গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
কোন কাজ করতে গিয়ে আটকে গিয়েছেন ? অনেক চিন্তা-ভাবনা করেও কোন সমাধান পাচ্ছেন না ? বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, একঝলক বিদ্যুৎ আমাদের মস্তিষ্ক এ প্রবাহিত করা হলে খুব সহজেই মস্তিষ্ক এমন একটি অবস্থায় পৌঁছে যায়, যার মাধ্যমে খুব সহজে মস্তিষ্ক কার্যকর উপায়ে কাজ করার উপযোগী হয় এবং যেকোনো সমস্যার সমাধান অতি সহজেই বের করা সম্ভব হয় তখন।
গবেষকেরা মনে করেন, মস্তিষ্ক সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য যখন জানা যাবে, তখন এটিও জানা যাবে যে কিভাবে ইলেকট্রিসিটি ব্যবহার করে মনে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা গাণিতিক দক্ষতা বাড়ানো যায়। এছাড়া হতাশা কাটিয়ে উঠার দারুন এক সমাধান হতে পারে এটি। তবে এই জন্য সবার প্রথমেই দরকার মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে, সেটি উন্মোচন করা। আর এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতেই খরচ করা হচ্ছে লক্ষ কোটি ডলার।
মস্তিষ্ক
এ বিষয়ে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক গ্যারি মার্কাস জানান,” আমার কোন সন্দেহ নেই যে একদিন আমরা মস্তিষ্ক এর গতিবিধি জানতে পারবো। তবে বড় প্রশ্নটি হচ্ছে, কবে জানতে পারবো ?”
মস্তিষ্ক কে বৈদ্যুতিক থেরাপি দেওয়ার প্রাচীন এক ইতিহাস রয়েছে। প্রাচীন গ্রীক কিংবা রোমানরা তাদের মাথাব্যাথা দূর করার জন্য আটলান্টিক টর্পেডোর সাহায্য নিতো। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বর্তমানে আবার এই একই ধরণের চিকিৎসা ব্যবস্থা ফিরে এসেছে। কিছু সমস্যা যেমন- হতাশা, মৃগীরোগ কিংবা কিছু মানসিক সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা হচ্ছে Transcranial Direct Current Stimulation বা TDCS পদ্ধতি, এমনটাই জানালেন রাইট স্টেট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নিউরোসায়েন্টিস্ট Michael Weisend।
কিভাবে করা হবে ?
প্রথমেই মাথায় একটি ছোট ডিভাইস স্থাপন করা হবে এবং এতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। পরবর্তীতে সুইচ অন করা মাত্রই এক ঝলক বিদ্যুৎ বয়ে যাবে মাথার ভেতর দিয়ে। এরপর মাথার ভেতর একটু ঝিমঝিম ভাব থাকতে পারে যা কিছুক্ষণের মধ্যেই মিলিয়ে যাবে। তবে এর সাথে মিলিয়ে যাবে বিষণ্ণভাব এবং দুশ্চিন্তা। আর ঝরঝরে মেজাজে যেকোনো কাজ করা যাবে খুব কম সময়ে এবং সহজেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা করা যাবে।
অনেকে এটিকে সায়েন্স ফিকশন ভাবতে পারেন। তবে এটি এখন আর মোটেই সেরকম কিছু নয়। কারন ইতোমধ্যেই TDCS এর সুফল পেতে শুরু করেছে মানুষ। যদিও অনেক গবেষক মস্তিষ্ক কে উদ্দীপিত করার এই পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে চিন্তিত, তবে এর পক্ষেও অনেক আশাব্যঞ্জক গবেষণা হয়েছে।
সেদিন আর খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন মানুষ তাদের মস্তিষ্ক এর ক্ষমতা বাড়াতে শরণাপন্ন হবে এই বিদ্যুৎ প্রবাহের।
পোস্ট সম্পর্কিত সমস্যার জন্য মন্তব্য দিন।ডাউনলোড লিঙ্ক এ সমস্যা জন্য ইনবক্স করুন Aimzworld007
ConversionConversion EmoticonEmoticon