নিউক্লিয়ার এ্যানর্জি: চেনা জানা কিছু অজানা কথা-2

ভয়াবহতা: আপনি কি রকম ভয়াবহ মৃত্যু চান? দেখা গেলো গরম যখন 48 ডিগ্রীতে উঠে তখন রোদের নীচে 20 মিনিট থাকলে ডিহাইড্রেশন শুরু হয়ে যায় আর 30 মিনিটের মাথায় স্যাফোকেশনে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। হয়তো কয়েক ঘন্টা বাজী ধরলে হিটবার্নের কারনে হাসপাতাল অতঃপর হতে পারে গোরস্হান, যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আমরা জানি পৃথিবীর কেন্দ্রে যে লাভা আছে তাতে নাকি পৃথিবীর সকল জিনিসই দ্রবীভূত হয়। একটা ইস্পাতে খন্ড যার দ্রবনাংক 1800 ডিগ্রী সেটাও মাখনের মতো গলে লাল হয়ে যাবে। আর সূর্য্যের কেন্দ্রে যে পরিমান তাপ আছে সেটার কথা নাই বা বললাম।
তাহলে আমরা কি এটা জানি যে একটা হাইড্রোজেন বোমা যখন বিস্ফোরিত হয় তখন বিস্ফোরনস্হলে যে পরিমান তাপ উৎপন্ন হয় তা সূর্য্যের কেন্দ্রের তাপের চাইতেও কিছু বেশী? কি পরিমান অনিয়ন্ত্রিত ফিশন ঘটলে এরকম ভয়াবহ তাপের সৃস্টি হতে পারে, যেটা সাধারন্যের ভাবনার বাইরে! আবার একটা পারমানবিক বিস্ফোরন যখন ঘটে তখন তার আশেপাশে কয়েক মিটারের মধ্যে সবকিছুই এমনকি আয়রন কোরও বাস্পীভূত হয়ে যায় অতিরিক্ত তাপের কারনে। আর যারা কেন্দ্রের আশেপাশে থাকে তারা কিন্তু সত্যিই সৌভাগ্যবান কারন তারা অনুভব করতে পারেনা মৃত্যুর যন্ত্রনা কি রকম! হয়তো মৃত্যুর পর যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে তাদের আত্নাটাও শিওর থাকবে না তার দেহের একটু আগে মৃত্যু ঘটেছে কি না। আর এই সৌভাগ্যের হার কমতে থাকে দুরত্বের সাথে এবং সবচেয়ে দুর্ভাগা তারাই যারা ঐ বিস্ফোরনস্হল বিস্ফোরন এ্যাফেক্টেড জোনের মধ্যে সবচেয়ে দূরে অবস্হান করবে, কারন সেই সব ব্যাক্তিই বুঝতে পারবে দীর্ঘমেয়াদী মৃত্যু কতটা ভয়াবহ! তাই (খোদা না করুন)যদি কখনো কোন পারমানবিক বিস্ফোরনের সম্মুখীন হতে হয় তাহলে আমরা চেস্টা করবো যতটা পারি ক্রিটিক্যাল দূরত্বের বাইরে থাকলে বিস্ফোরনস্হল হতে যতটা সম্ভব দূরে সরে যাওয়া আর ক্রিটিক্যাল দূরত্বের ভিতরে থাকলে কেন্দ্রস্হলের দিকে এগিয়ে যাওয়া। কথাগুলো পাগলামী শুনালেও এটাই সত্য! তবে এটা বিশ্বাস করি নিয়ন্ত্রিত সবকিছুই কল্যানকর: সেটা যতই ভয়াবহ শক্তিধর হোক না কেন!
যাই হোক, আমাদের আলোচনায় ফিরে আসি!

ফুয়েল সাইকেল

প্রত্যেক পাওয়ার স্টেশনের একটা ফুয়েল সাইকেল থাকে যার মাধ্যমে এটা আসলে কত বছরের জন্য সাসটেইনেবল ডিজাইনে করা হয়েছে আর এটা দিয়ে বোঝা যায় আসলে এর জ্বালানীকে কতভাবে সবচেয়ে বেশী দক্ষতার সাথে কাজে লাগানো হয়েছে।
তবে তার আগে নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাইকেল সম্বন্ধ একটু আলোকপাত করা দরকার।নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাইকেল বলতে যেটা বুঝায় এ কাজে ব্যবহ্রত জ্বালানী যেটা দিয়ে চেইন রিএ্যাকশন ঘটানো হয় সেটাকে রিপ্রসেস করে আবারো ব্যাবহার করা হবে না সেটাকে কিছু প্রসেসিং এর মাধ্যমে গুদামজাত করা হবে এর সমস্ত কর্মপন্হাকেই। এখানে যেমন টেকনিক্যাল ব্যাপার যতটা না জড়িত তারচেয়ে বেশী জড়িত সিকিউরিটি আর উদ্দেশ্য নিয়ে।
ঐ ব্যাপারে পরে আসি তার আগে কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে আমরা কথা বলি। দুধরনের ফুয়েল সাইকেল বিদ্যমান একটা ওপেন ফুয়েল সাইকেল আর একটা ক্লোজড ফুয়েল সাইকেল।
ওপেন ফুয়েল সাইকেল: ব্যাবহ্রত জ্বালানী যদি আবার রিপ্রসেস না করে সরাসরি ডিজপোজাল বা বিশেষ পন্হায় পুতে ফেলা হয় তখন এই ফুয়েল সাইকেলকে ওপেন ফুয়েল সাইকেল বলা হয়।
ক্লোজড ফুয়েল সাইকেল: ব্যাবহ্রত জ্বালানী যদি রিপ্রসেস করে আবারও ব্যাবহার করা হয় তার পর যখন এর জ্বালানী হিসেবে এর সর্বোচ্ছ ব্যাবহার নিশ্চিত হবে তখন এই প্রসেসকে ক্লোজড ফুয়েল সাইকেল বলে!এখানে ব্যাবহ্রত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ জ্বালানীকে রিপ্রসেস করার পর অন্য একটা রিএ্যাকটরে বার্ন করা হয়।
ফ্রান্সকে এক্ষেত্রে বেশ অগ্রগামী হিসেবে ধরা যায় আর এই প্রক্রিয়ার বেসিক কনসেপ্ট হচ্ছে ক্লোজড সাইকেলের মাধ্যমে ব্যবহ্রত জ্বালানীর প্লুটোনিয়াম আর ইউরেনিয়াম অক্সাইডের মিশ্রন থেকে প্লুটোনিয়ামকে আলাদা করে আবারো পুড়ানো হয় মানে রিএ্যাকশনের কাজে ব্যাবহার করা হয়। এসব ট্রান্সুরানিক (যাদের এ্যাটোমিক নম্বর 92 এর উপরে) পদার্থগুলোকে এরকম রিসাইকেল করে পুনরায় ব্যাবহার করার দীর্ঘমেয়াদী প্রসেসকে বলা হয়ে থাকে তথাকথিত ফাস্ট রিএ্যাক্টর।এক্ষেত্রে দেখা যায় বার বার ব্যাবহারের ফলে যে বর্জ্যের সৃস্টি হবে তারমধ্যে থাকা দীর্ঘমেয়াদী রেডিওএ্যাক্টিভ ম্যাটেরিয়ালের পরিমান আশংকাজনকভাবে কমে গিয়ে কাছাকাছি স্ট্যাবল আর কমস্হায়ী (কম হাফলাইফ সম্পন্ন) রেডিওএ্যক্টিভ পদার্থে রূপ নেয় ফলে দীর্ঘস্হায়ী রেডিওএ্যাক্টিভ বর্জ্যের হাত থেকে অনেকাংশে রেহাই পাওয়া যায়। তবে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় গবেষনা এবং প্রচলিত সুবিধার মানোন্নয়নের মাধ্যমে এসব বর্জ্যের দীর্ঘমেয়াদী গুদামজাতকরনের টেকনিক্যাল আর অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
ওপেন ফুয়েল সাইকেল
চিত্র: এই ফুয়েল সাইকেল বেশ কয়েক দশক ধরে ব্যাবহ্রত হচ্ছে । একবার রিএ্যাক্টরে ইউরেনিয়াম পোড়ানোর পর ওটার বর্জ্যকে বর্জ্যের গুদামে রাখা হয় (লাল দাগাংকিত পথ)।কিছু দেশ সম্প্রতি এমন ক্লোজড ফুয়েল সাইকেল ব্যাবহার করছে যেখানে প্লুটোনিয়ামকে বের করে আনা হয় ব্যবহ্রত জ্বালানী থেকে এবং তাতে ইউরেনিয়াম মিশিয়ে আবারো রিএ্যাক্টরে ব্যাবহার করা হয়(চিত্রে দেখানো হয় নি)। আর উন্নততর ফুয়েল সাইকেলে (সাদা দাগাংকিত রেখা) আরো বেশী ব্যাবহারযোগ্য করে গড়ে তোলা হয়েছে যার ফলে অদূর ভবিষ্যতে ব্যাবহ্রত জ্বালানীতে থাকা প্লুটোনিয়াম আর অন্যান্য পদার্থ সমূহ (এ্যাক্টিনাইডস) এবং ইউরেনিয়াম আবারো রিপ্রসেস করে বার্নার রিএ্যাক্টরে পোড়ানো হবে যেটা দীর্ঘমেয়াদী গুদামজাত করনের বর্জ্যের পরিমান কমিয়ে দেবে।
আসলে ব্যাবহ্রত জ্বালানীকে পুনরায় রিসাইক্লিং এর মাধ্যমে যেটা দেখা যায় অধিকতর কম কাচামাল দিয়ে একই শক্তির আউটপুট পাওয়াকে নিশ্চিত করাটাকে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয় যেখানে দীর্ঘমেয়াদী তেজস্ক্রীয় পদার্থের পরিমান কমিয়ে বেশ কয়েক হাজার বছর পর্যন্ত পুতে রাখার ব্যাবস্হা করা।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে এই ওপেন সাইকেলের ব্যাবহার আগামী কয়েক দশক ধরে চলবে। তবে কিছু ব্যাপার লক্ষনীয় এখানে: প্রথমত রিসাইকেল করা বর্জ্য কাচামাল হিসেবে ব্যাবহ্রত জ্বালানী হতে বেশী মূল্যবান। দ্বিতীয়ত বারবার ব্যাবহারের ফলে এখানে প্রচুর পরিমানে ইউরেনিয়ামের আইসোটোপ তৈরী হয় যেগুলো আরো বেশ কয়েক বার পোড়ানো যায়, ফলে একটা পাওয়ার স্টেশনের লাইফ সাইকেল এমনিতেই ৪০-৫০ বছর সাসটেইন করার মতো অবস্হার চলে যায়।তৃতীয়ত এর পারমানবিক বর্জ্যগুলো পুতে ফেলা অনেক নিরাপদ যেখান থেকে ভবিষ্যতে বিপদের আশংকা অনেক কম থাকে আর অনেক বছর পর্যন্ত নিরাপদেই সংরক্ষন করা যেতে পারে। অবশেষে এর মাধ্যমে প্রচুর এনরিচড প্লুটোনিয়াম পাওয়া যায় যা দিয়ে পারমানবিক অস্ত্র বানাবার রসদ খুব সহজেই পাওয়া যেতে পারে।
গত দুই দশক ধরে যে রিএ্যাকটরটি একচ্ছত্র আধিপত্য সৃস্টি করেছে সেটা হলো হালকা পানির রিএ্যাকটর যেটাতে মূলত সাধারন পানির ব্যাবহার করা হয় ডিউটেরিয়ামের বদলে।এখনকার বেশীর ভাগ রিএ্যাকটর গুলোই এর মতো করে বানানো।
রিএ্যাকটর ডিজাইন দুটো প্রজন্মে ভাগ করা যায়। প্রথমদিককার ডিজাইনটা মূলত তৈরী করা হয়েছিলো ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ এর শেষের দিক পর্যন্ত। দ্বিতীয় প্রজন্মের রিএ্যাক্টর ডিজাইন শুরু হয় ১৯৬০ এর শেষের দিক হতে ১৯৯০ এর প্রথম দিক পর্যন্ত।তৃতীয় প্রজন্মের রিএ্যাক্টরে আগের ডিজাইন গুলোকে এক করে আরো উন্নততর প্রযুক্তির সন্বিবেশনে উন্নততর জ্বালানী ব্যাবহার নিশ্চিত করে নতুন কিছু উপহার দেয়ার চেস্টা করা হয়েছে যেখানে মূলত নিরাপত্তাটাকেই মূখ্য বিষয় হিসেবে ধরা হয়েছে।
ধরা যাক একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেলো কোনো জায়গায়, সেক্ষেত্রে রিএ্যাক্টরে অবস্হিত সকল কার্যক্রম নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে ঐ অবস্হায় এবং সেখানে বাকী জ্বালানীগুলোকে সাথে সাথে নিরাপদে রেখে ক্ষতির পরিমান সর্বনিম্ন মার্জিনে রাখা হবে।
তৃতীয় প্রজন্মের সর্বপ্রথম রিএ্যাক্টরটি বাসনো হয় জাপানে ১৯৯৬ সালে। এর মূল বৈশিষ্ঠ্য হলো এটা অনেকটা উচ্চ তাপামাত্রার পেডলবেড আর লেডকুলড ফাস্ট রিএ্যাক্টরের মতো কাজ করে।
পেডল বেড রিএ্যাক্টরের একটা আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো এটা অনেকগুলো প্রকোষ্ঠে কাজ করে যার প্রতিটা সর্বনিম্ন ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে সক্ষম যেখানে বর্তমানের রিএ্যাক্টগুলোর একেকটা ১০০০-১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে সক্ষম। এ রিএ্যাক্টরগুলো ডিজাইন করা হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কথা চিন্তা করেই, কারন তখন এসব দেশগুলো তাদের চাহিদামাফিক প্লান্ট বসাতে পারে, ফলে ব্যাবসায়িক দিক থেকেসফল হবার জন্য ক্যাপেক্স/ওপেক্সে খুব একটা চাপ ফেলে না।দক্ষিণ আফ্রিকা ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পেডল বেড রিএ্যাক্টর বসানোর পরিকল্পনা করে ফেলেছে ২০০৭ সালে যার কাজ শেষ করতে লাগবে ২০১১ সাল নাগাদ এবং পরে এর সাথে বানিজ্যিক ভিত্তিতে আরো ১৬৫ মেগাওয়াটের রিএ্যাক্টর যুক্ত করা হবে ২০১৩ সাল নাগাদ। দক্ষিণ আফ্রিকা আশা করছে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ আন্তর্জাতিক ভাবে সরবরাহ করা হবে।

মূল্যমান

এখন আসা যাক মূল্যের ব্যাপারে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে বিদ্যুতের মূল্য আর কর সংযোজন যেমন সরকারের জন্য একটা ভাবনার বিষয় ঠিক তেমনি জনগনই বিচার করবে যে আদৌ এই মূল্যের বিদ্যুৎ তাদের জন্য সুখকর সংবাদ বয়ে আনবে কি না! সেক্ষেত্রে অনেকেই অনেক কিছু বলেন, কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতার নিরীখে আর অভিজ্ঞতার আলোকে কথা বলতে চাইলে আসলে একটা দ্বিধার সৃস্টি হয়।
এত ঝামেলায় না গিয়ে এখানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিউট অব টেকনোলজীর একটা নিরীক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে পারি যেটার মূলত এসব মানদন্ডের দরকার নেই (যারা ইন্জ্ঞিনিয়ার বা একটু খোজ খবর রাখেন বাইরের ভার্সিটি সম্পর্কে তাদের জন্যই এটা বলা, তবে একটা দুঃখ আছে যে আমার সৌভাগ্য হয়নি এখানে পড়ার)। এই স্টাডিটা ২০০৩ সালে করা হয়েছিলো যেখানে সবকিছু বিবেচনায় এনে দেখা গেছে যে নতুন মডেলের হালকা পানির রিএ্যাক্টরে যে বিদ্যুৎ তৈরী হবে তার মূল্য পরে ৬.৭ সেন্ট পার কিলোওয়াট- আওয়ার যেটায় দেখা যাচ্ছে বিনিয়োগকারী খুব দ্রুত তার বিনিয়োগের টাকা মার্কেট থেকে উঠিয়ে আনতে পারবে।একই ভাবে যদি অন্যভাবে অন্য জ্বালানী যেমন গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরী করা যায় উদাহরন স্বরুপ একটা নতুন পাওয়ার স্টেশন যার জ্বালানী কয়লা তা দিয়ে যে বিদ্যূৎ তৈরী হবে তার মূল্যমান হবে ৪.২ সেন্ট পার কিলোওয়াট-আওয়ার। সেখানে একটা নতুন গ্যাস স্টেশনে ৫.৮ সেন্ট পার কিলোওয়াট-আওয়ার মূল্যের বিদ্যুৎ দিতে পারে(আন্তর্জাতিক বাজারে ৭ ডলার পার মিলিয়ন বিটিইউ)।
একসময় হয়তো অনেকেই বলেছিলো নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ সামনে এতটাই সাশ্রয়ী হবে মানুষের আর তখন মিটার দেখার প্রয়োজনও পরবে না।তবে এমআইটি আগের সকল তিক্ত অভিজ্ঞতা, বাজারের উপর নীচ এবং পাওয়ার স্টেশন গুলোর পারফরমেন্স বিচার করে খুব একটা আশাবাদী কিছু বলতে পারেনি।
তবে হ্যা, কিছু কিছু পদক্ষেপ অবশ্যই এর মূল্যকে কমিয়ে ফেলতে পারে। ২৫% কমিয়ে ফেলা যায় যদি এর কনস্ট্রাকশন খরচ কিছুটা কাটছাট করা যায়। ০.৪% কমানো যাবে যদিনা একটা নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশন বানানোর সময়টা ৪ থেকে ৫ বছর কমিয়ে ফেলা হয়।এসব কাটছাট একটা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদন খরচে তখনই কমিয়ে ফেলা সম্ভব যখন একটা বিশাল অংশের স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন ডিজাইন মেনে নিয়ে এটা করা হয়।
তবে এটা ঠিক নিউক্লীয়ার পাওয়ার প্লান্ট তখন আরো সস্তা মনে হবে যদি না আমরা দীর্ঘমেয়াদী আর্থ-সামাজিক ব্যাবস্হা, রাজনৈতিক অস্হিরতা, কার্বন ডাই অক্ষাইড নির্গমনের উপর ট্যাক্সকে বিবেচনায় রাখি। বলা হয়ে থাকে পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র যেখানে তৈরী হয় সেখানকার স্হানীয় বসতীগুলো ইকাসিস্টেম আর সামাজিক ভারসাম্য নস্ট হয়ে অস্হিরতা এবং রাজনৈতিক কলহের সৃস্টি হয় যার উৎকৃস্ট উদাহরন আমাদের কাপ্তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। গ্যাস দিয়ে ব্যাবহ্রত পাওয়ার স্টেশনগুলো সবসময়ই যে সমস্যায় ভুগে সেটা হলো ধারাবাহিক গ্যাস সরবরাহ আর পানির রিজার্ভয়ার আর ব্যাবহ্রত পানির ডিজপোজাল। এতেও দেখা প্রাকৃতিক অবক্ষয় বিদ্যমান যার প্রধান কারন আশেপাশের পানির উৎসগুলো দ্রুত নস্ট হয়ে যায়। তারপর কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমনতো আছেই। তবে প্রধান সমস্যা হলো গ্যাসের খনিগুলোর একটাই সমস্যা, গ্যাস দ্রূত শেষ হয়ে যায়। ফলে দেখা যাবে পাওয়ার স্টেশনগুলোর লাইফ সাইকেল শেষ হবার আগেই জ্বালানীর উর্ধ্বমূল্য আর অপ্রতুল সরবরাহের সম্মুখীন হতে হয়।
তবে কার্বন ডাই অক্সাইডের উপর ট্যাক্স ধরাটা এখনও অনেক উন্নত দেশে নির্ধারন করাটা একটু ঝামেলার, বিশেষ করে এর মূল্য নির্ধারনের ম্যাকানিজমটা একটু কমপ্লেক্স আর বন্ধুর। ইউরোপে এমনি একটা সিস্টেম ডেভেলপ করেছে যেখানে মুক্তবাজারে কার্বনের নির্গমনের অনুমতিকে ব্যাবসায়িক দিক থেকে বিচার করা হয়েছে। ২০০৬ সালের প্রথমদিকে ১০০ ডলার পার টনের কিছু বেশী ধার্য করা হলেও বর্তমানে এটা পড়ে গেছে।মাত্র ৫০ ডলার পার টন হারের ট্যাক্স কয়লার পাওয়ার স্টেশনের উৎপাদন খরচ ৫.৪ সেন্ট পার কিলোওয়াট-আওয়ারে নিয়ে আসে। ২০০ ডলার পার টন কার্বন এটাকে ৯ সেন্ট পার কিলোওয়াট-আওয়ারে নিয়ে আসে। সেক্ষেত্রে গ্যাসচালিত পাওয়ার স্টেশনে এর মূল্য দাড়ায় ৭.৯ সেন্টপার কিলোওয়াট-আওয়ার।



বর্জ্য ব্যাবস্হাপনা বা ওয়েস্ট ম্যানেজম্যান্ট!

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের দ্বিতীয় বাধাটা হচ্ছে এই বর্জ্যের নিরাপদতম সংরক্ষন বা নিঃস্কাশন। এখনও পর্যন্ত কোনো দেশই এই বর্জ্যের নিস্কাশনের জন্য স্হায়ী সমাধানে আসেনি। তবে সবচেয়ে নিরাপদ ভৌগলিক ব্যাবস্হাপনাকেই ধরে নেয়া হয়েছে যার ফলে কোনোরকম রেডিওএ্যাক্টিভ বর্জ্যের লিকেজ না হয়। এখানে একটা কথা বলে রাখা উচিত সাধারনত এসব বর্জ্যের স্হাপনাগুলো মাটির কয়েকশ মিটার নীচে এমন এক জায়গায় তৈরী করা হয় যেখানে মাটির নীচে অবস্হিত পাথর বা পরিবেশের গঠন প্রকৃতির উপর পর্যবেক্ষন করে সেরকম সুগঠিত প্রকোষ্ঠ বা কনটেইনার তৈরী করা হয়ে থাকে যেখানে এসব বর্জ্যগুলো বছরের পর বছর পরে থাকবে আর এগুলো নিয়ে কিছু বিজ্ঞানী নিরলস ভাবে কাজ করে যাবে যারা অভিজ্ঞ থাকবে রেডিওএ্যাক্টিভ নিওক্লি এর পরিসন্ঞ্চালন সম্পর্কে যেটা প্রভাবিত করতে পারে আশেপাশে জৈবিক পরিবেশকে।
চলবে




















Previous
Next Post »

পোস্ট সম্পর্কিত সমস্যার জন্য মন্তব্য দিন।ডাউনলোড লিঙ্ক এ সমস্যা জন্য ইনবক্স করুন Aimzworld007
ConversionConversion EmoticonEmoticon

Thanks for your comment